Thursday, February 15, 2018
মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ মুসলিম দেশ ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র!
বর্তমান সময়ে বিশ্বজুড়ে সফলতার সাথে যেটা চলছেসেটা হলো ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’ বা ‘Psychological warfare’। এ যুদ্ধের দ্বারা খুব সফলতার সাথে সম্রাজ্যবাদীরা একের পর এক দেশ দখল করে যাচ্ছে।
সাবেক কেজিবি এজেন্ট মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বিশারদ আলেক্সন্ডার ব্রেজমেনভ মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের দ্বারা কোন দেশ দখল করার জন্য
চারটি ধাপ বর্ণনা করেছে।
প্রথম স্টেজ : ডি-মরালাইজেশন বা নৈতিক চরিত্র অবক্ষয়।
দ্বিতীয় স্টেজ : ডি-স্টেবিলাইজেশন বা স্বাভাবিক
পরিবেশকে ভেঙ্গে দেওয়া।
তৃতীয় স্টেজ : ক্রাইসিস বা চরম অস্থিতিশীলতা তৈরী করা।
চতুর্থ স্টেজ : নরমালাইজেশন বা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার নাম
দিয়ে দখল করা।
# প্রথমে ধাপ বা ডি-মরালাইজেশন বা নৈতিক চরিত্র ধ্বংসঃ
এ ধাপে একটা জাতিকে বিভিন্ন বিনোদনের নামে টিভি-সিনেমা,গান-বাজনা, খেলাধূলা, নাটক-সিরিয়ালের নাম দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ডিমরালাইজ করে দেওয়া হয়। ঐ জাতি বাস্তবতা ভূলে সারা দিন বিনোদন নিয়ে নেশাগ্রস্তের মত পরে থাকে। ক্রিকেট খেলা শুরু হলে দিক-বিদিক ভুলে যায়। নাটক-সিরিয়ালে যা দেখে সেটা অনুসারে জীবন গঠন করতে চায়। ব্লগ-ফেসবুকে বার বার ধর্মবিদ্বেষী কথা প্রচার করে ধর্মীয় বাধন (অনুভূতি) তুলে দেওয়া হয়। যেমন - সামু, ধর্মকারী, ইস্টিশন
# দ্বিতীয় ধাপ বা ডি-স্টেবিলাইজেশন বা স্বাভাবিক পরিবেশকে ভেঙ্গে দেওয়াঃ
স্ট্যাবল বা স্থিতিশীল পরিবেশ ভেঙ্গে দেওয়ার নামই হচ্ছে ডি-স্টেবিলাইজেশন। এর অনেক উদাহরণ আছে। সংক্ষেপে একটা উদাহরণ দিচ্ছি। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে যেটা সৃষ্টি হয়েছে এটা একটা ডি- স্টেবিলাইজেশন প্রক্রিয়া। হঠাৎ করে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা, কথিত সৃজনশীল সিস্টেম চালু করা, ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে এ+ প্রাপ্তরা পাশ না করা, ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে নতুন বিতর্কিত সিস্টেম, হলমার্ক, শেয়ার বাজার, বাংলাদেশ ব্যাংক সহ দেশের কোষাগার লুট করা ইত্যাদির নামে শিক্ষাক্ষেত্রকে ডি-স্টেবিলাইজ বা অস্থিতিশীল করা হয়েছে। এছাড়া আইনবিভাগ, রিয়েল এস্টেট খাত, লবন শিল্প, চিনি শিল্প, ধান, কৃষি শিল্প, রামপাল, তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ সহ সব সেক্টরগুলো অস্থিতিশীল করা হবে। এরপর আরএমজি সেক্টরকে অস্থিতিশীল,
বলাবাহুল্য যেহেতু ঐ জাতিটি নৈতিক ভিত্তিহীন বা ডি-মরালাইজ, তাই সেসকল অপকর্ম বুঝেও কিছুই করতে পারে না।
# তৃতীয় ধাপ বা ক্রাইসিস বা চরম অস্থিতিশীলতাঃ
এটা এক ধরনের যুদ্ধাংদেহী অবস্থা। জাতির নৈতিক চরিত্র না থাকায় এবং পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়ার সুযোগে বহিঃশক্তিধরা ঐ দেশের অভ্যন্তরের দালাল রাজনীতিবিদদের পরষ্পরের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে লাগিয়ে দেয়। শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
যেমন, সাম্প্রতিক সময়ে ভিন্ন দেশের হস্তক্ষেপ কামনা, বিভিন্ন হত্যা।
# চতুর্থ ধাপ বা নরমালাইজেশন বা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার নাম দিয়ে দখল করাঃ
যখন কোন দেশে গৃহযুদ্ধ লেগে যায়, তখন বিশ্ব মোড়ল বা সুপার ফকির দাবিদার সাম্রাজ্যবাদীরা একসাথে বসে, কিভাবে কে কোন দিক দিয়ে ভাগ করবে! বলে অমুক দেশে গৃহযুদ্ধ বিরাজ করছে সেটা বন্ধ করা দরকার (যদিও তারাই সেটা সৃষ্টি করেছে)। তখন তারা শান্তি প্রতিষ্ঠার নাম দিয়ে সৈন্য পাঠায়। এবং নরমালাইজেশনের নাম দিয়ে দেশটা দখল করে নেয়।
যেহেতু ঐ জাতির নৈতিক কোন ভিত্তি নাই, তাই তারা প্রতিবাদ বা বিরোধীতা করার ভাষা হারিয়ে ফেলে। তখন জনগন উল্টো বলতে থাকে, ‘অমুক দেশের কালচার আমার ভালো লাগে, ভালোই হয়েছে অমুক দেশ দখল করেছে’।
এভাবেই সম্রা্জ্যবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে প্ল্যান করে একটির পর এক দেশ দখলে কাজ করে যাচ্ছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment